প্রাকৃতিক কারনেই পৃথিবীর প্রতিটি প্রানীই ঘুমায় এটা ঠিক কিন্তু আমি নিশ্চিত বিভিন্ন প্রানীর ঘুম সম্পর্কে আপনাদের ধারনা খুবই কম।
আচ্ছা একবার ভাবুনতো সৃষ্টি জগতের কত কিছুই তো দেখেছেন কিন্তু নিশ্চিত ভাবে বলুনতো জীবনে কয়টি প্রাণীকে আপনি ঘুমন্ত অবস্থায় দেখেছেন??
ঘুম প্রকৃতির এমন এক অনাবিষ্কৃত রহস্য যার কূলকিনারা এখনো বিজ্ঞানীরা খুজে বের করতে পারেনি।
সাধারণত একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকেন। এভাবে প্রতি মাসে একজন মানুষ ৮ ´ ৩০ = ২৪০ ঘন্টা বা ১০ দিন এবং একই ভাবে প্রতি বছরে ৮ ´ ৩৬৫ = ১২১.৬৬৭ ঘন্টা বা প্রায় ৪ মাস ঘুমায়।
অর্থাৎ একজন মানুষ সারা জীবনের ৩ ভাগের ১ ভাগ সম্পূর্ণ ঘুমিয়ে কাটায়।
এটা খুবই সহজ এবং বোধগম্য হিসাব।
ঘুম বিজ্ঞানীরাও কম চেষ্টা করেছেন তা নয়, তারা ঘুমকে ব্যাখ্যা করার জন্য নানা মতামত এবং গবেষনা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ঘুমের সংজ্ঞা:
“ ঘুম হল প্রানীর স্নায়ুবিক এবং যান্ত্রিক সেই স্থিরাবস্থা যে অবস্থায় তার শরীরের যাবতীয় মাংশপেশী শিথিল অবস্থায় থাকে এবং প্রানী সম্পূর্ণ সচেতন বা অবচেতন অবস্থায় থাকে। এ প্রক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর বার সংঘঠিত হয়।”
দুনিয়ার প্রায় সকল প্রানীর ক্ষেত্রেই ঘুম জিনিসটা প্রত্যক্ষ করা যায়। তবে নিম্ন বর্গের প্রানীদের ক্ষেত্রে ঘুমন্ত অবস্থা নির্ণয় করা কঠিন।
সাধারণত মানুষের ঘুম দুই ধরনের:
- Rapid Eye Movement Sleep (REM) অর্থাৎ ঘুমের এ ধাপে মানুষের চোখ বেশি নড়ে থাকে।
- Non-Rapid Eye Movement Sleep (NREM or non-REM) ঘুমের এ ধাপে মানুষের চোখ বেশি একটা নড়ে না।
দুই ধরনের ঘুমেরই রয়েছে শারীরবিদ্যা, নিউরোলজি এবং মনস্তত্ত্ব বিদ্যা সম্পর্কিত নানারকম বৈশিষ্ট্য। কোন সময় চোখের গতিবেগ কেমন এটা নিচের চিত্র থেকে ভালো বুঝতে পারবেন।
উপরের চিত্রে ঘুমের কোন ধাপে মানুষের মস্তিষ্ক, পেশী এবং চোখের সক্রিয়তার রেকর্ড শো করে। এখানে:
- EEG (electroencephalogram) ঘুমন্ত মানুষের মস্তিষ্কের কার্যাবলি শো করে।
- EMG (electromyogram) ঘুমন্ত মানুষের মাংশপেশীর কার্যাবলি শো করে।
- EOG (electroculogram) ঘুমন্ত মানুষের চোখের কার্যাবলি শো করে।
ঘুমের এই ধাপগুলো ১৯৩৭ সালে সর্বপ্রথম বের করা হয়। পরে ১৯৫৩ সালের দিকে ঘুমের ধাপগুলোর মধ্যে NREM কে আরো তিনটি ভাগে ভাগ করেন। ২০০৭ সালে American Academy of Sleep Medicine (AASM) এর মতেও তাই বলা হয়েছে। ফলে ঘুমের প্রকৃত স্তরের সংখ্যা হয়ে দাড়ালো ৪টিতে।
অর্থাৎ মানুষের ঘুম হয় নিম্নোক্ত চারটি ধাপে:
NREM stage 1 → NREM stage 2 → NREM stage 3 → NREM stage 2 → REM
সাধারণত মানুষের ঘুমের ২০ – ২৫% হয় REM পর্যায়ে এবং বাকি ৮০ – ৭৫% অংশ ঘুম হয় NERM পর্যায়ে।
ঘুমের কারনে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া:
ঘুমানোর সময় ঠিক না হলে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমও একজন মানুষের জন্য যথেষ্ট নয় বলা যায় না। অর্থাৎ ভুল সময়ে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমালেও কোন লাভই হবে না। একজন মানুষের শরীরে তাপমাত্রা যখন সবচেয়ে কম থাকে তখন তার কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
অ্যামেরিকার National Sleep Foundation এর মতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৭ – ৯ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। এ পর্যাপ্ত ঘুম তাকে সতর্কতা, স্মৃতি, উপস্থিত বুদ্ধি এবং সর্বোপরি শরীরিক ভাবে উপকৃত করে।
২০০৩ সালে University of Pennsylvania এর স্কুল অব মেডিসিন ঘোষনা করে যে ৬ ঘন্টা বা তার কম ঘুমালে তা মানুষের উপস্থিত বুদ্ধি কমিয়ে দেয়।
University of California, San Diego এর এক গবেষনায় দেখা যায় যে যারা ৭ – ৮ ঘন্টা ঘুমায় তাদের মধ্যে মৃত্যু হার বেশি।
কিন্তু পরবর্তিতে University of Warwick ও University College London গবেষনা করে দেখায় যে অল্প পরিমানে ঘুম মানুষের অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা দ্বিগুন বাড়িয়ে দিতে পারে। একই ভাবে বেশি ঘুমের ফলেও একই ক্ষতি হতে পারে।
কিন্তু সর্বশেষ তথ্যমতে Professor Francesco Cappuccio বলেন: অল্প ঘুমের সাথে মৃত্যুর সম্ভাবনা বৃদ্ধির একটা সম্পর্ক থাকলেও দীর্ঘ ঘুমের সাথে মৃত্যুর সরাসরি কোন সম্পর্ক দেখা যায় না।
ঘুমের কারনেই সৃষ্টি হয় প্রচন্ড অবসাদ ও ক্লান্তি। ফলে মানুষের সামাজিক অবস্থানেরও অবনতি হয়।
বিভিন্ন জরিপ থেকে দেখা গেছে যে, প্রায় ৯০% অবসাদগ্রস্থ লোকেরই অবসাদের অন্যতম কারন অল্প ঘুম।
উপরের আলোচনা থেকে এটা নিশ্চিত বোঝা যাচ্ছে গবেষকেরাও ঘুম নিয়ে এখনো নিশ্চিত ভাবে ক্ছিু বলা সাহস পান না। অর্থাৎ আধুনিক বিজ্ঞান এখনো ঘুমের রহস্য ভেদ করতে ব্যর্থ।
মানুষের ঘুমের ব্যাখ্যাই আমরা করতে পারি না, অন্যপ্রানীর ঘুমের ব্যাখ্যা তো আরো সমস্যাকর এবং জটিল।
একারনেই প্রানীদের ঘুম সম্পর্কিত অনেক প্রশ্নের উত্তরই আমাদের এখনো অজানা।
নিচের প্রশ্নগুলো কয়েকটির উত্তর দেয়া হল:
- একটি প্রানী কেন ঘুমায় ??
উ: সত্যি কথা বলতে কি বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন। তবে বেশির ভাগ বিজ্ঞানীরই ধারনা প্রানীর বেঁচে থাকার জন্যে ঘুম দরকার।
খুবই ক্লান্ত অবস্থায় জেগে থাকার চেষ্ট করলে দেখা যায় মস্তিষ্ক ঠিক ভাবে কাজ করছে না। কিন্তু একটু ঝিমুনির পর দেখা যায় মস্তিষ্কের জড়তা অনেক কমে গেছে। অর্থাৎ মস্তিষ্কের সঠিকভাবে কার্য সম্পাদনের জন্য ঘুম দরকার।
- সব প্রানীই কি ঘুমায়??
উ: এটা বলা কঠিন। আমারা অনেক প্রানী দেখেছি বটে কিন্তু তাদের ঘুমাতে দেখিনি। সব প্রাণীরই মস্তিষ্ক একধরনের বৈদ্যুতিক সিগনাল প্রেরন করে যা বিজ্ঞানীরা বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করতে পারেন। বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রানী ও পাখির ক্ষেত্রে ঘুমানো সময় এ সিগনাল পরিবর্তত হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মাছ এবং ব্যাঙের ক্ষেত্রে এদেরকে ঘুমন্ত মনে হলেও এদের মস্তিষ্কের সিগনালের কোন পরিবর্তন দেখা যায় না।
অর্থাৎ মাছ এবং ব্যাঙ ঘুমায় না কিন্তু আসে পাশে কি ঘটছে সে দিকে মনোযোগ না দিয়ে কিছুক্ষন স্থির হয়ে থেকে এরা ঘুমের কাজ চালিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে মতপার্থক্য রয়েছে। কোন বিজ্ঞানীর মতে এর ঘুমানো প্রক্রিয়া আলাদা। অপর দিকে কোন কোন বিজ্ঞানীর মতে এ প্রানীগুলো একেবারেই ঘুমায় না।
- প্রানীরা কখন ঘুমায়??
উ: এটা বিভিন্ন প্রানীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন। কারন তাদের বেঁচে থাকার ধরন আলাদা। বেশির ভাগ প্রাণীই যেমন- মানুষ, পাখি ইত্যাদি সারাদিন কাজ শেষ করে রাতে ঘুমাতে যায়।
অপরদিকে বিড়াল এবং রাতজাগা পাখি যেমন-পেঁচা তখন ঘুম থেকে জেড়ে উঠে। বিড়ালের ক্ষেত্রে বেতিক্রমও দেখা যায়
বুনো খরগোস(Rabbit) এবং হরিনের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা সূর্যোদ্বয় এবং সূর্যাস্তের সময় একধরনের ঝিমুনি বা ঘুম ঘুম অবস্থায় থাকে
হায়ানা সারারাত শিকারের সন্ধানে ঘুড়ে বেড়ায় কিন্তু দিনের বেলায় সে প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে
আর ঘুমের ক্ষেত্রে মানব শিশুরা একটু ব্যতিক্রম ধর্মী অর্থাৎ তারা কখন যে ঘুমায় আর কখন যে না ঘুমায় তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই
- প্রানীরা কতক্ষন ঘুমায়??
উ: এটা খুবই রহস্যজনক যে প্রানীদের ঘুমের সময় আসলে তার নিরাপত্তার উপর নির্ভর করে।
বড় এবং মাংসাশী প্রানীরা খুব বেশি একটা বিপদের মধ্যে থাকে না। একারনেই এরা অনায়াসেই দিনে ১৭ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটাতে পারে।
একই রকম ভাবেই খুব সুরক্ষিত জায়গায় বসবাস কারী প্রানীরাও এত বেশি ঘুমিয়ে থাকে।
যেমন-গুহায় বসবাসকারী বাদুর ২৪ ঘন্টা মধ্যে ১৯ ঘন্টাই ঘুমিয়ে কাটায়।
কিন্তু খুর যুক্ত এমন কিছু প্রানী আছে যারা উদ্যান ও খোলা জায়গায় বসবাস করে এবং তাদের শত্রুরও অভাব নেই। এ প্রজাতির প্রানীদের লুকানোর মতো কোন নিরাপদ জায়াগা নেই। ফলে এরা সর্বদাই সজাগ থাকে এবং যেকোন ধরনের আক্রমনের হাত থেকে বাঁচতে প্রস্তুত থাকে। একারনেই এ ধরনের পশুরা দিনে মাত্র কয়েক ঘন্টা ঘুমানোর সুযোগ পায় তাও আবার পায়ের উপর দাড়িয়ে। এর মধ্যে জিরাফ এবং ঘোড়া অন্যতম।
নিচে বিভিন্ন প্রানীর ঘুমের সময়ের একটি তালিকা দেয়া হল:
Species | Average Total Sleep Time (% of 24 hr) | Average Total Sleep Time (Hours/day) |
বাদুর (বাদামী) | 82.9% | 19.9 hr |
জায়ান্ট আর্মাডিলো | 75.4% | 18.1 hr |
ওপোসাম | 75% | 18 hr |
অজগর | 75% | 18 hr |
পেঁচা বানর (রাতজাগা) | 70.8% | 17.0 hr |
মানুষ (শিশু) | 66.7% | 16 hr |
বাঘ | 65.8% | 15.8 hr |
গেঁচো ইঁদুর | 65.8% | 15.8 hr |
কাঠবিড়ালি | 62% | 14.9 hr |
পশ্চিমা ব্যাঙ | 60.8% | 14.6 hr |
নকুল | 60.4% | 14.5 hr |
Three-toed Sloth | 60% | 14.4 hr |
সোলালি ইঁদুর (ধেড়ে) | 59.6% | 14.3 hr |
প্লাটিপাস | 58.3% | 14.0 hr |
সিংহ | 56.3% | 13.5 hr |
Gerbil | 54.4% | 13.1 hr |
ইঁদুর(ধেড়ে) | 52.4% | 12.6 hr |
বিড়াল | 50.6% | 12.1 hr |
চিতাবাঘ | 50.6% | 12.1 hr |
ইঁদুর | 50.3% | 12.1 hr |
রেসাস বানর | 49.2% | 11.8 hr |
খরগোশ | 47.5% | 11.4 hr |
জাগুয়ার | 45% | 10.8 hr |
পাতিহাঁস | 45% | 10.8 hr |
কুকুর | 44.3% | 10.6 hr |
Bottle-nosed dolphin | 43.3% | 10.4 hr |
Star-nosed Mole | 42.9% | 10.3 hr |
বেবুন | 42.9% | 10.3 hr |
ইউরোপীয়ান শজারু | 42.2% | 10.1 hr |
স্কুইয়ারেল মানিক | 41.3% | 9.9 hr |
সিম্পাঞ্জি | 40.4% | 9.7 hr |
গিনিপিগ | 39.2% | 9.4 hr |
মানুষ (প্রাপ্তবয়স্ক) | 33.3% | 8 hr |
শুকর | 32.6% | 7.8 hr |
Guppy (fish) | 29.1% | 7 hr |
Gray Seal | 25.8% | 6.2 hr |
মানুষ (বৃদ্ধ) | 22.9% | 5.5 hr |
ছাগল | 22.1% | 5.3 hr |
গরু | 16.4% | 3.9 hr |
এশিয়ান হাতি | 16.4% | 3.9 hr |
ভেড়া | 16% | 3.8 hr |
আফ্রিকান হাতি | 13.8% | 3.3 hr |
বানর | 13.0% | 3.1 hr |
গোড়া | 12.0% | 2.9 hr |
জিরাপ | 7.9% | 1.9 hr |
(দুঃখিত, ইংরেজি প্রানীগুলো বাংলায় সঠিক কোন অনুবাদ খুজে পাই নি।)
- কোন কোন প্রানী স্বপ্ন দেখে??
উ: বিজ্ঞানীদের মতে ঘুমের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্ক যখন অতি সক্রিয় হয়ে উঠে তখন মানুষ স্বপ্ন দেখে। সাধারণত ঘুমের REM পর্যায়ে সংঘটিত হয়।
বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে দেখেছেন এ ধরনের ঘুম স্তন্যপায়ী প্রানী এবং কিছু পাখির ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘুম পর্যবেক্ষন করেছেন।
একারনে তাদের ধারনা এ প্রানীগুলোও হয়তো স্বপ্ন দেখে।
- ঘুমের সময় প্রানীরা মাঝে মাঝে কেন স্বপ্ন দেখে??
উ: এ ব্যাপারে অনেক বিতর্কিত মতবাদ রয়েছে তবে সবচেয়ে গ্রহণ যোগ্য মতবাদ অনুসারে ঘুমের REM পর্যায়ে মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কের্টেক্সের নিউরনের বিশৃঙ্খল উত্তেজনা কারনেই প্রানীরা স্বপ্ন দেখে।
- প্রানীরা কিভাবে স্বপ্ন দেখে??
উ: আগের প্রশ্নের মতো মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কের্টেক্সের নিউরনের বিশৃঙ্খল উত্তেজনার সৃষ্টি করে। ফলে মস্তিষ্কের সম্মুখ ভাগ উত্তেজনার ফলে সৃষ্টি বিশৃঙ্খল তথ্যগুলোকে মস্তিষ্কের কাছে গ্রহনযোগ্য করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে এবং ঐ বিশৃঙ্খল তথ্যগুলোর সাথে একধরনের সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করে। মানুষের মস্তিষ্ক খুবই শক্তিশালী একটা কম্পিউটারের মত সে এ সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গ্রহনযোগ্য তথ্যকে এমন ভাবে উপস্থাপন করে যেন তা বাস্তবেরই মত। আর এ ঘটনাকেই আমরা বলি স্বপ্ন।
- প্রানীরা কিভাবে ঘুমায়??
উ: সত্যি কথা বলতে প্রানীরা খুবই বিচিত্র ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে থাকে। এর কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। বলতে গেলে প্রানীরা প্রায় সব জায়গায় সব রকম ভঙ্গিতেই ঘুমিয়ে থাকে।
কিছু প্রানী সবার সামনেই খোলা মেলা জায়গায় ঘুমায়।
আবার কিছু কিছু প্রানী নিজেদেরকে লুকিয়ে ঘুমায়।
কোন কোন প্রানী একা ঘুমায় আবার কিছু কিছু প্রানী দলবদ্ধ ভাবে ঘুমায়।
শুশুক পানির নিচে ঘুমায়। মজার ব্যাপার হল এরা কিছুক্ষন পর পরই পানির উপরে উঠে নিঃশ্বাস নিয়ে আবার পানির নিচে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
চিতা বাঘ ঘুমায় গাছের ডালে লম্বা করে গা ছড়িয়ে
কাঠবিড়ালি ঘুমায় মাটির নিচের গর্ত করে
ভোদড় ভাসমান অবস্থায় চিত হয়ে পানিতে ঘুমায়
swift পাখি উড়ন্ত অবস্থায়ই ঘুমাতে পারে
গরিলা এবং সিম্পাঞ্জী নিজেদের ঘুমানো জন্য নরম বিছানা তৈরি করে নেয়
পাহাড়ি ছাগলতো উচু পাহাড়ের কিনারের খুব সরু তাকের মত অংশের মধ্যেই দাড়িয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারে
মাটিতে ঘুমানো নিরাপদ নয় বলে পান্ডার জন্য কষ্টকর হলেও এটি গাছের উপর উঠে ঘুমায়
রেড ফক্স এবং কুকুরের মত অনেক প্রানীই মাটিতেই গোল হয়ে পেঁছিয়ে ঘুমায়
অনেক পাখিই গাছের ডালে বসে বসে ঘুমায়
আমি প্রথমেই একবার প্রশ্ন করেছিলাম: পৃথিবীর এত প্রানীর মধ্যে আপনি ঘুমন্ত অবস্থায় কয়টি প্রানীকে দেখেছেন????
খুবই কম ঠিকনা????
উপরে ঘুমন্ত প্রানীর ছবিগুলোতে আছেই, তার পরেও দেখুন প্রানীরা কত বিচিত্র ভঙ্গিতে ঘুমায়:(সাধারণ হলেও ছবিগুলো দুর্লভ ও অনেক কষ্ট করে তোলা হয়েছিল)
ঘুমের স্টাইল - ১
ঘুমের স্টাইল - ২
ঘুমের স্টাইল - ৩
ঘুমের স্টাইল - ৪
ঘুমের স্টাইল - ৫
ঘুমের স্টাইল - ৬
ঘুমের স্টাইল - ৭
ঘুমের স্টাইল - ৮
ঘুমের স্টাইল - ৯
ঘুমের স্টাইল - ১০
ঘুমের স্টাইল - ১১
ঘুমের স্টাইল - ১২
ঘুমের স্টাইল - ১৩
ঘুমের স্টাইল - ১৪
ঘুমের স্টাইল - ১৫
ঘুমের স্টাইল - ১৬
ঘুমের স্টাইল - ১৭
ঘুমের স্টাইল - ১৮
ঘুমের স্টাইল - ১৯
ঘুমের স্টাইল - ২০
ঘুমের স্টাইল - ২১
ঘুমের স্টাইল - ২২
ঘুমের স্টাইল - ২৩
ঘুমের স্টাইল - ২৪
ঘুমের স্টাইল - ২৫
আমার এ টিউনটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে দয়া করে মন্তব্য করে জানান।
আপনাদের সবাইকে অসংখ্যা ধন্যবাদ।
তথ্যসূত্র:
- National Wildlife Federatio এবং ইন্টারনেট।
- Aserinsky, E., Eyelid condition at birth: relationship to adult mammalian sleep-waking patterns, In Rapid Eye Movement Sleep, edited by B.N. Mallick and S. Inoue, Narosa Publishing, New Delhi, 1999, p. 7.
- Campbell, S.S. and Tobler, I., Animal sleep: a review of sleep duration across phylogeny. Neuroscience and Biobehavioral Rev., 8:269-300, 1984.
- Kryger, M.H., Roth, T. and Dement, W.C., Principles and Practice of Sleep Medicine, W.B. Saunders Co., Philadelphia, 1989, pp. 39-41.
- Tobler, I., Napping and polyphasic sleep in mammals, In Sleep and Alertness: Chronobiological, Behavioral and Medical Aspects of Napping, edited by D.F. Dinges and R.J. Broughton, Raven Press, New York, 1989, pp. 9-31
- ইংরেজি উইকিপিডিয়া।
0 Comments